ভালোবাসার মানুষটি যখন পতিতা - ভালোবাসার গল্প

একটি পতিতা মেয়ের ভালোবাসার গল্প কষ্টের, কষ্টের গল্প, প্রেমের গল্প, রোমান্টিক গল্প, Valobasar golpo



রাতের আধারে
 ভালোবাসার মানুষটিকে কাস্টমার খুজতে দেখে অবাক হয়ে গেলেম।


এইকি সেই তিশা যাকে আমি পাগলের মতো ভালোবেসেছিলাম?না না এটা কিভাবে সম্ভব?তিশাতো খুব ভালো মেয়ে ছিলো,সে এরকম পতিতার কাজ কক্ষনো করতে পারে না।



আচ্ছা এটা অন্যকেউ নয়তো যে কিনা তিশার মতো দেখতে? খানিকটা সন্দেহ হলো, হয়তো আমি রাতে অন্ধকারের মধ্যে এই মেয়েটাকে তিশার মতো দেখতে পাচ্ছি?



সন্দেহ দূর করতে খানিকটা এগিয়ে গেলাম।দেখছি মেয়েটা রাস্তা দিয়ে যাওয়া মানুষদের বলছে..



সাহেব আমাকে নিয়ে যান,এক রাতের জন্য মাত্র দু হাজার টাকা



মেয়েটি প্রচন্ড পরিমানে মেকাপ করেছে,সাথে চোখে গারো কাজল এবং ঠোঁটে লাল টকটকে লেবেস্টিক লাগিয়েছে সেগুলো ল্যামপোস্টের আলোতে ভালোভাবেই বুঝা যাচ্ছে।  বুঝতে পারছি এসব কিছু করেছে খদ্দেরকে আর্কষণ করার জন্য।



আমি মেয়েটির কাছে যেতেই মেয়েটি আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে সাইটে চলে গেলো।আমি মেয়েটিকে তিশা বলে ডাক দিলাম।মেয়েটি শুনলো না তাই দৌড়ে মেয়েটির সামনে গিয়ে দারালাম।মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলাম..



~আপনি কি তিশা?


কেনো জানি মেয়েটি আমার উল্টোপাশ হয়ে দাড়ালো।মনে হচ্ছে তার চেহারা আমাকে দেখাতে চাইতেছে না।কিন্তু পতিতারা তো তাদের চেহারা দেখেই কাস্টমারদের আর্কষণ করায় তাহলে এই মেয়েটি কেনো আমাকে দেখে ঘুরে দারালো?মেয়েটি আমার প্রশ্নের জবাবে না বলে উত্তর দিলো।আমিও একটু গর্ববোধ করে বললাম...



~সরি আপনাকে ডিস্টার্ব করার জন্য। আসলে আপনার চেহারা ঠিক আমার ভালোবাসার মানুষটির মতো তাই জিজ্ঞেস করলাম।অবশ্য আমার প্রিয় মানুষটির উপর আমার যথেষ্ট ভরসা আছে সে এরকম পতিতার কাজ জিবনেও করতে পারে না।



 মেয়েটির দিকে ফিরে দেখলাম মেয়েটির চোখে পানি।মেয়েটি আমার কথা শুনে কাদছে কেনো? হঠাৎ করে আমার চোখ মেয়েটির গলার মধ্যে যাওয়ায় আমি থথথ হয়ে গেলাম।নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছেনা আজকে।এটা আমি কি দেখছি। এটা দেখার পর আমার পুরো পৃথিবী যেনো থেমে গেলো।আমার ভালোবাসার মানুষটি এরকম কাজ কিভাবে করতে পারে?



আসলে এই মেয়েটিই আমার সেই প্রানপ্রিয় তিসা যাকে আমি নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবেসেছিলাম।এই মেয়েটির কানের নিচে গলায় দুটো লাগালাগি তিল আছে যেমনটি আমার ভালোবাসার মানুষটির ছিলো।ভালোবাসার মানুষটির এরকম অবস্থা দেখে চোখ দিয়ে একফোঁটা নোনা জল বেরিয়ে এলো।



তিশার এরকম অবস্থা হলোই বা কি করে? তিশা এরকম ব্যবসা কেনো করসে? সেতো খুব ভালো মেয়ে ছিলো তাহলে কেনো এই ধান্ধায় নেমেছে? এমন কি হয়েছিলো যে তিশা রোজগার করার এই পথটা বেছে নিলো? এরকম নানা প্রশ্ন মাথার মধ্যে উকি দিচ্ছিলো।ইচ্ছে করছিলো এইসব প্রশ্নগুলো একটার পর একটা করে তিশার কাছ থেকে উত্তর নেই কিন্তু পরক্ষণে মনে হলো এরকম পরিস্থিতিতে প্রশ্নগুলো করা উচিত হবে না।তাই চিন্তা করলাম আজকে রাতে নাহয় আমি তিশাকে নিয়ে যাই? বাড়ি গিয়ে নাহয় সব প্রশ্নের উত্তর নিবো।



তিশার দিকে তাকিয়ে দেখলাম এখনো তিশার চোখে পানি।আমি তিশাকে চিনেও না চিনার ভান ধরলাম কারন সে চাইছিলো না তার পরিচয় আমার কাছে শিকার করতে।আমি একটু স্বাভাবিক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম...



~আপনার রেট কতো?


তিশা মাথা নিচু করে উত্তর দিলো


~আপনাকে দেখেতো ভালো ছেলে মনে হচ্ছে তাহলে কেনো আমার মতো মেয়েকে ভারা করছেন?


বেশ বুজতে পারছি তিশা আমার সাথে যেতে চাইতেছে না।আমি একটু রাগি গলার ভাব ধরে বললাম


~ভালো হই বা খারাপ তাতে আপনার কি? আপনি আজ রাতে আমাকে দিবেন কিনা বলেন? এক রাতে তিন হাজার টাকা দিবো।


বলেই তিশার হাত ধরে জোর করেই টেনে নিয়ে আসতে লাগলাম।তিশা আসতে চাইছিলো না কিন্তু আমার শক্তির কাছে তার সামান্য শক্তি কিছুই না।


তিশাকে ভারা করে বাড়িতে নিয়ে আসলাম।


আমি একটা বাড়িতে একাই থাকি।আমার বাবা মা অন্য জেলায় থাকে।মূলত চাকরির জন্য আমি এখানে থাকি।বাবা মাকে এখানে আনতে চেয়েছিলাম কিন্তু তারা গ্রামের বাড়ি ছেড়ে এখানে আসতে রাজি হয়নি তাই আমি এখানে একাই থাকি। সকালে কাজের বুয়া এসে রান্না করে দিয়ে যায় আমি খেয়েদেয়ে অফিসে চলে যাই তারপর বুয়া বিকেলে এসে ঘরের হালকা কাজ করে রান্না করে রেখে চলে যায়।



তিশাকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে ডুকলাম।বাড়ির লাইটগুলো জ্বালিয়ে তিশাকে নিয়ে রুমের দিকে এগুতে লাগলাম।তিশা সারা রাস্তা কিছু বলেনি আর এখনো কিছু বলছে না চুপ করে আছে।



আমার রুমে তিশা ডুকতেই দেয়ালের চারদিকে হা করে তাকিয়ে আছে।তার ছবি দিয়েই আমি পুরো রুমটা সাজিয়েছি।নিজের ছবিগুলো দেখে অনেকটা অবাক হয়েছে তিশা।নিজের ছবিগুলো আমাকে দেখিয়ে বললো 



~এই মেয়েটি কে একদম আমার মতো দেখতে?


আমিও অবাক হয়ে গেলাম তিশার কথা শুনে।এখনো তিশা আমার কাছ থেকে তার পরিচয় লুকাতে চাইছে।আমি ছবিগুলো দেখিয়ে বললাম


~এই মেয়েটি হলো তিশা।এই মেয়েটি একদম আপনার মতো দেখতে তাই রাস্তায় আপনাকে আমি তিশা মনে করে ডেকেছিলাম।


দেয়ালে ঝুলানো ছবিগুলোর মধ্যে একটা ছবিতে স্পষ্ট তিশার গলার জোরা তিলগুলো দেখা যাচ্ছিলো এটা দেখে তিশা তার চুল দিয়ে নিজের গলার জোরা তিলগুলো ডাকতে লাগলো অবশ্য এটা আমার চোখ এরালো না।আমি না দেখার ভান করে থাকলাম।



তিশা আমাকে জিজ্ঞেস করলো


~এই মেয়েটির এতোগুলো ছবি আপনার রুমে কেন?


আমি প্রতিউত্তরে বললাম


~আগে ফ্রেস হয়ে নিন তারপর বলছি।


আমার কথা শুনে তিশা বাধরুমে ফ্রেস হতে চলে গেলো।কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসলো।চেহারা থেকে মেকাপ, লেবিস্টিক আর কাজলগুলো উঠে যাওয়া ভালোই লাগছিলো তিশাকে।তিশা বেরিয়ে আসতেই আমি বাথরুমে চলে গেলাম ফ্রেস হতে।কিছুক্ষণ পর বের হয়ে দেখলাম তিশা খুব মনযোগ সহকারে দেয়ালে টাঙানো ছবিগুলো হাতিয়ে হাতিয়ে দেখছে।



তিশার চেহারা শুকনো শুকনো লাগছিলো।জিজ্ঞেস করলাম


~রাতে খেয়েছেন?


তিশা মুখে এক চিলকি হাসি দিয়ে বললো...


~আমার মতো মেয়েদের খাওয়ার চিন্তা না করে কাস্টমারদের কিভাবে খুশি করবো সেটা ভাবতে হয়।



তিশার কথাটা যেনো বুকের মধ্যে লাগলো।মনে হচ্ছে কেউ একজন সজোরে কিছু দিয়ে বুকের মধ্যে বারি মেরেছে।না জানি পতিটা রাত কত কষ্টে কেটেছে তিশার? ভাবতেও ভয় লাগছে। কেনোই বা আমি তিশাকে ছেড়ে এসেছিলাম? আমি তিশার পাশে থাকলে কক্ষনোই তিশার এরকম অবস্থা হতো না।নিজের গালে নিজেই চর মারতে ইচ্ছা করছে।কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে তিশাকে বললাম...



~চলেন একসাথে খাবো?


তিশা প্রথমে রাজি হচ্ছিল না কিন্তু পরে আমার জোরাজোরিতে খেতে বাধ্য হলো।


আজকে বুয়া আমার প্রছন্দের চিংড়ি মাছ রান্না করেছে।অবশ্য এটা তিশা খায় কিনা জানিনা।তিশাকে জোর করে টেবিলে বসিয়ে ভাত বেরে দিতে লাগলাম।কিন্তু তারপরও তিশা খাচ্ছিলো না।বাধ্য হয়ে আমি আমার প্লেট থেকে এক গাস(লোকমা) ভাত তিশার মুখের সামনে এগিয়ে ধরলাম।আমার এরকম করাতে তিশা বাধ্য হয়ে বললো

~আপনি খান আমি নিজে নিয়ে খাচ্ছি।



আমি খাওয়া বাদ দিয়ে তিশার তিশার খাওয়ার দিকে চেয়ে রইলাম।কেমন ছিলো মেয়েটি আর কেমন হয়ে গেছে।এই মেয়েটি যে সেই কলেজের তিশা ছিলো সেটা আমি ছাড়া হয়তো কেউ চিনতে পারবে না।



খাওয়া শেষ করে আমরা রুমে ফিরে গেলাম।তিশা আমার বিছানায় বসে তার ওরনাটা গলা থেকে নামিয়ে বিছানায় রেখে দিলো।আমি সেটা দেখে তাড়াতাড়ি করে ওরনাটা সুন্দর করে তিশাকে পরিয়ে দিলাম

তিশা অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে।হয়তো সে এটা আশা করেনি।কি করেই বা আশা করবে তার কাজই তো কাপড় খুলানো।এই প্রথম কোনো পুরুষ তিশার ওরনা বুক থেকে না সরিয়ে বুকের মধ্যে পরিয়ে দিলো।



তিশা অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমি বললাম...


~ওরনার আসল জায়গা বুকে,বিছানায় নয়।


আমার কতা শুনে তিশা আরো বেশি করে অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।


কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হয়ে তিশা আমাকে বললো..


~কিহলো বললেন নাতো এই দেয়ালে টাঙানো ছবিগুলোর মেয়েটি কে? কেনই বা তার এতোগুলো ছবি দিয়ে আপনি রুমটাকে সাজিয়েছেন?


আমি বলা শুরু করলাম......