ভালোবাসার কবিতা - Bangla romantic poem - Bangla romatic kobita

প্রিয় পাঠকগন, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো 'মুনমুন ফেরদৌসী দীপ্তি' আপুর লেখা একটি প্রেমের কবিতা। আশা করি এই কবিতা টি আপনাদের ভালো লাগবে। আর হ্যাঁ, এই রখম আরো ভালোবাসার কবিতা এবং প্রেমের কবিতা পেতে আমাদের ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।


কবিতার নামঃ মেহেদী রাঙ্গা হাত।
লিখেছেনঃ মুনমুন ফেরদৌসী দীপ্তি।

একটা নীল আকাশ আর ঝলমলে রোদ্দুর
তুমি আমি বসে কখনো কবিতা পড়ছি, কখনো
গান গাইছি, কখনো খুনসুটিতে মেতে আছি
খোলা আকাশের নিচে বসে কোনো এক গাছের ছায়ায়৷
আমার শখ হলো আজ রোদ্রস্নান করি, 
তুমি বললে মুঠ মুঠ করে রোদ এনে দিচ্ছি,
তোমাকে আমি নিজের হাতে স্নান করাবো।
আমি নাছোড়বান্দা, এ কথায় সায় না দিয়ে গাছের ছায়া ছেড়ে তোমাকে নিয়ে রোদের ঝর্ণায় দাঁড়ালাম৷
আহ্ কি সোনা রোদ! আমাদের দুজনের অঙ্গে
মাখিয়ে দিচ্ছে আর আমরা ভিজে চলেছি লবনাক্ত জলের স্রোতধারায়!
দুহাত বাড়িয়ে আমার হাত দুটো ধরে স্নান করতে চাইলে৷ তুমি চাইলে আমি কি মানা করতে পারি?
তোমার হাতের মুঠোই ধরা দিলাম আমার হাত দুটো।
তুমি বলে উঠলে, একি তোমার হাত যে এত ঠাণ্ডা!
মেহেদী পরেছো দেখছি, ঠিক আমি যেভাবে চেয়েছিলাম! নাকের কাছে হাত নিয়ে বললে মেহেদীর ঘ্রাণ আমার বেশ লাগে! চোখে চোখ রেখে জানালাম গাছ থেকে পাতা মেহেদী পেড়ে খয়ের মিশিয়ে বেটেছি। তারপর সারাদিন ধরে হাতে লাগিয়ে রেখেছি যাতে আমার মেহেদীর রং লাল হতে হতে গাঢ় খয়েরী হয়ে যায়৷
ও পাড়ার দিদি বলেন, যার হাতে মেহেদী যত বেশি রং 
হবে, তার ভালোবাসার মানুষ তাকে ততো বেশি ভালোবাসবে। দিদি ধমকের সুরে বলেছিলেন, আরো কিছুক্ষণ মেহেদী হাতে রেখে দে , দেখবি ভালো রং ধরবে৷ সারাদিন খাইনি। কিভাবে খাব? দুহাত যে তোমার জন্য এঁকেছি, আমার গাঢ় খয়েরী রং চাই৷
সারাদিন বাদে হাত থেকে মেহেদী খুলে দেখি কমলা রং ধারণ করেছে কিন্তু আমি মানতে নারাজ। 
আবারো মেহেদী লাগালাম, সারারাত মেহেদী হাতে
বসে তোমাকে ভাবছি হয়তো তোমার ভালোবাসা পাব
তোমার মুখের হাসিখানা দেখব, ওটা যে আমার
ভীষণ প্রিয়৷ তারপর সকালে মেহেদী খুলে মনটা বড্ড বেশি খারাপ হয়ে গেল, কমলা থেকে হালকা লাল রং ধারণ করেছে৷ কিন্তু আমি যে তোমার সবটুকু ভালোবাসা চাই যা শুধু আমার জন্য থাকবে, অন্য কারো জন্য নয়, এমনকি তোমার পূর্বের প্রেমিকা যে কিনা আজ বিবাহিতা তোমারই ইচ্ছায়। সাত বছর তাকে ভালোবেসে তার সুখের জন্য অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলে! 
তোমার মনে এখন অনুশোচনার ঝড়, ভাবছো
হয়তো পারতে তাকে ভালোবাসার একটা পাকাপোক্ত নাম দিতে৷ নিজের কথা না ভেবে এক বুক চাপা কষ্ট সাথে রেখে তুলে দিয়েছিলে তাকে অন্যের হাতে৷ হোক সে সুখী এই আশায় ত্যাগ করেছিলে তোমার সুখগুলো৷
আজ যখন ক্ষমা চাইলে তোমার না পারার ব্যর্থতা জানিয়ে, সে তোমাকে দুহাত ভরে অভিশাপ দিল,
ধ্বংস হবে তুমি৷
হও তুমি ধ্বংস আমায় ভালোবেসে৷ গভীর থেকে
গভীরতর ভালোবাসা আমি চাই৷ চাই আমার
হাতের মেহেদীর রং গাঢ় খয়েরী হোক৷ আমি আবারো মেহেদী লাগাবো, দিন রাত অভুক্ত থেকে মেহেদী 
লাগিয়ে বসে থাকবো৷ আর তোমাকে আশীর্বাদ দিব৷
আমিও দেখতে চাই তার অভিশাপের জোর বেশি,
না আমার ভালোবাসার৷ 
ধ্বংস তুমি হবে আমার ভালোবাসায় 
নিজ হাতে তোমায় ধ্বংস করব
তোমার মন খারাপগুলো ধ্বংস করব 
তোমার চাপা কষ্টগুলো ধ্বংস করব
তোমার অনুশোচনাগুলো ধ্বংস করব
তোমার দুচোখ থেকে পড়া নোনা জল
যা তুমি সবার আড়ালে গড়িয়ে পড়ার আগেই
মুছে ফেলো, ঐ জল হবে এখন থেকে সুখের৷
সুখে হাসবে তুমি আর হাসতে হাসতে জল গড়িয়ে পড়বে আর আমি সেই জলে গাল ঘষে আমার গালে মাখবো৷ কথাগুলো শুনে মিষ্টি হেসে বললে, এসো আমার কাছে তোমার গালটা একটু ছুঁয়ে দেখি৷ একটু একটু করে তোমার কাছে যাচ্ছি ঠিক তখনই এক মেঘের গর্জনে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল! তবে কি আমি স্বপ্ন দেখছিলাম! তোমার আমার রোদ্রস্নান হয়নি! ওটা ছিল শুধুই স্বপ্ন? হাত মেলে দেখি আমার মেহেদীর রং
ফ্যাকাশে লালবর্ণ ধারণ করে করুণ দৃষ্টিতে
আমায় বলে যাচ্ছে, আমি তোমার হাতের ফ্যাকাশে রং বলছি, তোমার কপালে ভালোবাসা নেই৷
কেউ তোমাকে  ভালোবাসুক আর নাই বাসুক, তুমি ভালোবেসে যাও কারণ ওটাই তোমার ধর্ম৷


ট্যাগসঃ ভালোবাসার কবিতা, প্রেমের কবিতা, রোমান্টিক কবিতা